বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি ভারতের
- By Jamini Roy --
- 03 December, 2024
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে উগ্রবাদীদের হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উত্তেজনার মুখে পড়েছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) হামলার পর, বাংলাদেশ সরকার এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তদন্ত ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভারতের প্রতি কড়া বার্তা দিয়েছে।
সংগঠনের সদস্যরা মিশনের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলে এবং ভাঙচুর চালায়। এমনকি মিশনের কর্মকর্তাদের মারধর করারও অভিযোগ ওঠে। বাংলাদেশ এ ঘটনার জন্য ভারতের স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তাকেও দায়ী করেছে।
এই ঘটনায় মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। বিকেল ৪টায় ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব এম রিয়াজ হামিদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন তিনি।
বৈঠক শেষে প্রণয় ভার্মা সাংবাদিকদের বলেন, "আমরা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী এবং দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
ভার্মা আরও বলেন, "বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক বহুমুখী। একটি ঘটনা আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারবে না।"
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ঘটনার সঠিক তদন্ত, কূটনৈতিক মিশন ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, "প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণ করে যে এটি পূর্বপরিকল্পিত একটি হামলা। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে।"
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এটিকে "দুঃখজনক" বলে উল্লেখ করেছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, "কূটনৈতিক বা কনস্যুলার সম্পত্তি কোনো অবস্থাতেই লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।"
ভারত সরকার আগরতলার ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে এবং ৪ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
বৈঠকের সময় প্রণয় ভার্মা দুই দেশের মানুষের মধ্যে সংযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, "আমরা দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী।"
আগরতলার হামলার আগে কলকাতায় একটি সহিংস বিক্ষোভেও বাংলাদেশের পতাকা অবমাননার ঘটনা ঘটে। একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে বাংলাদেশ আরও সতর্কতার সঙ্গে কাজ করার ওপর জোর দিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারত কাজ করতে প্রস্তুত বলে জানালেও, কূটনৈতিক মিশনের ওপর হামলার মতো ঘটনা সম্পর্কের ওপর চাপ তৈরি করতে পারে। তবে উভয় দেশ পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই ঘটনা সাম্প্রতিককালে দুই দেশের মধ্যে সৃষ্ট কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের একটি অংশ হলেও, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে উভয় দেশের সরকারের অবস্থান ইতিবাচক বলে মনে করা হচ্ছে।